টেরাকোটার জলের বোতল: একটি পরিবেশবান্ধব সমাধান

“টেরাকোটা” একটি লাতিন শব্দ হলেও এই শব্দটার সাথে জড়িয়ে আছে বাংলার ঐতিহ্য। টেরাকোটা শুধু কোনো শিল্প নয়, এটা স্বয়ং একটা ইতিহাসের গল্প। সুপ্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতা, ব্যবীলনীয় সভ্যতা ও মায়া সভ্যতায় এই শিল্পের প্রচলন ছিল বলে জানা যায়। সিন্ধু সভ্যতায় পোড়ামাটির বাসনকোসনের ব্যবহার হয়েছিল বলে পুরাতত্ত্ববিদরা যথেষ্ট প্রমাণ পেয়েছেন। তবে বাংলায় টেরাকোটা বললে প্রথমেই মনে আসে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহরের কথা। এখানকার শিল্প নিদর্শন সারা পৃথিবীখ্যাত। 

মাটির বিভিন্ন মূর্তি, ফুলের টব, টাইলস, ঘর সাজানোর সামগ্রী ইত্যাদি থেকে শুরু করে আজকাল শিল্পীরা শৌখিন বাসনপত্র, জলের বোতল সবই তৈরি করছেন। এগুলির মধ্যে টেরাকোটার জলের বোতলের ব্যবহার দৈনন্দিন জীবনে ভীষণ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

এবার প্রশ্ন হলো প্লাস্টিক, তামা, স্টেইনলেস স্টীল ইত্যাদির বোতল থাকতে টেরাকোটার বোতল কেন? এর এককথায় উত্তর দিতে গেলে সামনে আসবে বিজ্ঞানের কথা। হ্যাঁ, বিজ্ঞান। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে বেশিরভাগ মানুষই বিজ্ঞানের ওপর আস্থা রাখেন। আর সেই বিজ্ঞানই যুক্তি দিচ্ছে টেরাকোটার বোতল ব্যবহারের। আমরা সকলেই জানি যে টেরাকোটার বোতল প্রাকৃতিকভাবে জল ঠান্ডা রাখতে পারে। কিভাবে সেটি হয় তা নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। পোড়ামাটির বোতলের গায়ে থাকে অসংখ্য সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ছিদ্র (Pores)। এই ছিদ্র দিয়ে জল অনবরত বাইরে আসতে থাকে এবং বাষ্প হয়ে পরিবেশের সাথে মিশে যায়। আর এই বাষ্পায়নের জন্য প্রয়োজনীয় লীন তাপ (Latent Heat) বোতলের ভিতরের জল থেকে গৃহীত হয় এবং এভাবেই পোড়ামাটির বোতলের জল ঠান্ডা থাকে।

এবার আসুন জেনে নিই এই বোতলের গুনাগুনগুলি এক নজরে,

ক) বর্তমানে যে হারে পরিবেশ দুষণের মাত্রা বেড়ে চলেছে তাতে সবুজ পৃথিবীর মরুভূমিতে পরিণত হতে বোধ করি আর বেশি দেরি নেই। যথেচ্ছ পরিমানে প্লাষ্টিক এর বোতল ব্যবহারের ফলে প্রতিনিয়ত এই দূষণ বেড়েই চলেছ। অন্যদিকে মাটির বোতল পরিবেশ বান্ধব কারণ মাটি পরিবেশের সাথে অতি সহজেই মিশে যায়। তাই এই পোড়ামাটির বোতল ব্যবহার বর্তমান সময়ে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এই বোতলের ব্যবহার কর্মক্ষেত্রে বা অন্যদের কাছে আপনাকে আর দশজনের থেকে আলাদা করে ও পরিবেশের প্রতি দায়িত্ববান করে তুলে ।

খ) প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার এখন সর্ব্বোচ সীমায় পৌঁছেছে। কিন্তু আপনারা কি জানেন প্লাস্টিকের বোতল তৈরির পরে এইসব বোতলে বেশ কিছু রাসায়নিক থেকে যেতে পারে যা মানব স্বাস্থের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাছাড়া নিয়মিত প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করলে জলের মধ্যে কিছু পরিমান মাইক্রোপ্লাষ্টিক (Microplastic) মিশে যায়, যা শরীরের জন্য খুবই খারাপ। তবে পোড়ামাটির বোতল ব্যবহারের ক্ষেত্রে এরূপ কোনো ভয়ের কারণ একেবারেই নেই।

গ) মানুষের পাকস্থলী থেকে অনেকরকমের অ্যাসিড ক্ষরিত হয়। আর কমবেশি সেগুলির অনেকগুলিই স্বাস্থের জন্য খুব একটা উপকারী নয়। কাদামাটি ক্ষার সমৃদ্ধ এবং এই মাটি পুড়িয়ে বোতল তৈরি করে তাতে জল রাখলে সেই জলের মধ্যেও অল্প পরিমাণে ক্ষার মিশে যায় ফলে জলের পি.এইচ. স্তরের ভারসাম্য বজায় থাকে। এই জল পান করলে পাকস্থলীর অনেক অ্যাসিড প্রশমিত হয় ও বদহজম, অ্যাসিডিটির মতো সমস্যাতে সাহায্য করে। 

ঘ) কাদামাটি যেমন ক্ষার সমৃদ্ধ তেমনই এটিতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে খনিজ পদার্থ। তাই পোড়ামাটির বোতলে জল পান করলে তা শরীরের বিভিন্ন খনিজের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে।  

ঙ) বর্তমানে অল্প বিস্তর সমস্ত বাড়িতেই রেফ্রিজারেটর এর বন্দোবস্ত আছে। কিন্তু রেফ্রিজারেটর এর ঠান্ডা জল যেই ব্যাগে ভরছেন অমনি তার কয়েক ঘন্টা পরে সেই জল আবার আগের মতো গরম হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এরকম বিভৎস গরমে গরম জল পান করার কথা ভাবলেও বোধ করি মনে কষ্ট হয়। অন্যদিকে মাটির বোতল প্রাকৃতিকভাবে জল ঠান্ডা রাখে। তাই মাটির বোতল কিন্তু একমাত্র উপায় যা আপনাদের এই কষ্ট থেকে এক নিমেষে মুক্তি দিতে সক্ষম। 

চ) রেফ্রিজারেটর এর জলও ঠান্ডা আবার মাটির বোতলের জলও ঠান্ডা। তবে এই দুই জলের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? পার্থক্য আছে। রেফ্রিজারেটর এর জল সরাসরি খাওয়া গলার জন্য ক্ষতিকারক এবং এই জল খেলে শরীরে ফ্যাটও জমতে পারে। কিন্তু পোড়ামাটির বোতলের জল যেহেতু প্রাকৃতিক উপায়ে ঠান্ডা হয় তাই এই জল শরীর ও গলা উভয়ের জন্যই বেশ আরামদায়ক।

বর্তমানে পোড়ামাটির বোতলের চাহিদা ভারতের গ্রাম থেকে ছড়িয়ে পড়েছে সুদূর ইউরোপ-আমেরিকার মতো দেশে। তাই আর দেরি কিসের? আপনারাও এবার ব্যবহার করুন টেরাকোটার জলের বোতল। “Amar Mati” আপনাদের কাছে নিয়ে এসেছে একেবারে খাঁটি, হাতে গড়া এই পোড়ামাটির বোতল। 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে আপনি “Amar Mati“র থেকেই কেন নেবেন ? আসুন জেনে নেওয়া যাক।  

ক) আমাদের এই মাটির জলের বোতল শৈল্পিক দক্ষতা, Elegant Looks, Finishing ও গুণমানের বিচারে সর্বোচ্চ। হাতে নিলেই  তা আপনি অনুভব করতে পারবেন। 

খ) এই জলের বোতল তৈরি করার জন্য আমরা ব্যবহার করি খনিজে সমৃদ্ধ গাঙ্গেয় উপত্যকার মাটি। 

গ) এটি ১০০% প্রাকৃতিক, কোনো রং, রাসায়নিক বা সিরামিক কোটিং ব্যবহার করা হয় না। 

ঘ) এটি পরিবেশ বান্ধব (Eco-Friendly), মজবুত এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য (Reusable)। 

ঙ) এটি পোড়ানো হয় উচ্চ তাপমাত্রায়, প্রায় ১২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ। তাই কোনোরূপ জীবাণু থাকার সম্ভাবনা নেই। 

তাই শরীর, স্বাস্থ্য, মন আর সাথে সাথে পরিবেশ সবকিছুকে সুস্থ রাখতে এখনই অর্ডার করে ফেলুন “Amar Mati”র ওয়েবসাইট থেকে।

Leave Comments